ব্রেকিং
শ্রীলঙ্কায় বন্যা-ভূমিধসে নিহত ৪০, নিখোঁজ ২১
ছবি: এপি

ভারী বর্ষণে সৃষ্ট বন্যা ও ধারাবাহিক ভূমিধসে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা। চলতি সপ্তাহে দেশজুড়ে এসব দুর্যোগে কমপক্ষে ৪০ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন। পাশাপাশি নিখোঁজ রয়েছেন আরও ২১ জন। বৃহস্পতিবার দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের (ডিএমসি) বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় এএফপি।

ডিএমসির তথ্যে বলা হয়, সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে মধ্যাঞ্চলের বদুল্লা জেলায়। চা-বাগানঘেরা পাহাড়ি অঞ্চলে রাতে ঢাল ভেঙে ঘরবাড়ির ওপর ধসে পড়ে। এতে চাপা পড়ে ২১ জনের মৃত্যু হয়। নুয়ারা এলিয়া জেলায় একইভাবে নিহত হয়েছেন আরও চারজন। বাকি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে।

প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪২৫টিরও বেশি বাড়ি। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে প্রায় ১ হাজার ৮০০ পরিবারকে অস্থায়ী কেন্দ্রগুলোতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নদীগুলোর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে; নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের উঁচু স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।

শ্রীলঙ্কায় এখন উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর সময়। তবে দেশটির পূর্ব দিকে অবস্থানরত একটি নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টি আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে বলে জানিয়েছে ডিএমসি। কিছু এলাকায় ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে—উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি স্থানে বৃহস্পতিবার ২৫০ মিলিমিটার পর্যন্ত বর্ষণের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

বৈরী আবহাওয়ার প্রভাব পড়েছে পার্শ্ববর্তী মালয়েশিয়াতেও। সেখানে বন্যার কারণে বর্ষশেষের স্কুল পরীক্ষা দু’দিনের জন্য স্থগিত করেছে সরকার। আইনপ্রণেতাদের নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শ্রীলঙ্কা পার্লামেন্টও বাজেট বিতর্ক স্থগিত করেছে।

ডিএমসি জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহের আবহাওয়া–সংক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা গত বছরের জুনের পর সর্বোচ্চ। ওই সময় ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। গত ডিসেম্বর বন্যা ও ভূমিধসে মারা যান ১৭ জন। দেশটির সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল ২০০৩ সালের জুনে, তখন প্রাণহানি ঘটে ২৫৪ জনের।

সেচ কার্যক্রম থেকে শুরু করে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন—সবকিছুর জন্য শ্রীলঙ্কা মৌসুমি বৃষ্টির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দেশটিতে বন্যার ঝুঁকি ও ঘনত্ব আরও বাড়তে পারে।