ব্রেকিং
চীনের পর ভারতের ভূখণ্ড দাবি করল নেপাল!

নেপালের কেন্দ্রীয় ব্যাংক (এনআরবি) নতুন ১০০ রুপির নোট বাজারে ছাড়িয়েছে। সেখানে দেশটির প্রকাশিত বিতর্কিত মানচিত্রে কালাপানি, লিপুলেখ ও লিম্পিয়াধুরা অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনটি অঞ্চলই বর্তমানে ভারতের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং ভারত এগুলোকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে।

জেন–জি আন্দোলনের ওলি সরকারের পতনের পর থেকে নেপালে দায়িত্ব পালন করছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই স্বল্পমেয়াদি সরকারের আমলেই নতুন নোট ইস্যু হওয়ায় বিষয়টি আবারও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বাজারে ছাড়া নোটটি এনআরবির সাবেক গভর্নর মহাপ্রসাদ অধিকারীর স্বাক্ষরিত। নোটের ইস্যুর তারিখ ২০৮১ নেপালি বর্ষ—যা ২০২৪ সালের সমতুল্য।

এর আগে, ২০২০ সালের মে মাসে কেপি শর্মা ওলির নেতৃত্বাধীন সরকার লিপুলেখ, কালাপানি ও লিম্পিয়াধুরাকে নেপালের অংশ দেখিয়ে একটি নতুন রাজনৈতিক মানচিত্র প্রকাশ করেছিল। পরে এটি সংসদে অনুমোদন পায়। সে সময় ভারত নেপালের এই পদক্ষেপকে একতরফা ও অগ্রহণযোগ্য বলে আখ্যায়িত করে এবং আঞ্চলিক দাবি সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কবার্তা দেয়।

ভারত দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে যে লিপুলেখ, কালাপানি ও লিম্পিয়াধুরা তাদের ভূখণ্ড। তবে নেপাল রাষ্ট্রীয় ব্যাংক (এনআরবি) জানায়, সরকার–নির্ধারিত মানচিত্র অনুযায়ী সংশোধন করেই নতুন ১০০ রুপির নোটে এই তিন অঞ্চল রাখা হয়েছে। এনআরবির এক মুখপাত্র বলেন, মানচিত্রটি আগেও পুরোনো ১০০ রুপির নোটে ছিল; এবার শুধু হালনাগাদ সংস্করণ ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ১০, ৫০, ৫০০ ও ১,০০০ রুপির নোটে মানচিত্র নেই—শুধু ১০০ রুপির নোটেই নেপালের মানচিত্র থাকে।

নতুন নোটের নকশায় বাম পাশে রয়েছে মাউন্ট এভারেস্টের ছবি, ডান পাশে রডোডেনড্রন ফুলের জলছাপ এবং কেন্দ্রে রয়েছে নেপালের হালকা সবুজ রঙের মানচিত্র। মানচিত্রের পাশে অশোক স্তম্ভের প্রতীক ছাপা, যেখানে উল্লেখ আছে—“লুম্বিনী, ভগবান বুদ্ধের জন্মস্থান।” নোটের পেছনে আছে এক শিংওয়ালা গণ্ডারের ছবি। নিরাপত্তার জন্য যুক্ত হয়েছে সুরক্ষা থ্রেড ও একটি কালো বিন্দু।

নেপালের নতুন নোটে বিতর্কিত তিন অঞ্চল যুক্ত করাকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর একতরফা সিদ্ধান্ত বলে আখ্যায়িত করেছেন।

ভারতের সঙ্গে নেপালের সীমান্ত ১,৮৫০ কিলোমিটারেরও বেশি। এগুলো ভারতের পাঁচ রাজ্য—সিকিম, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডজুড়ে বিস্তৃত।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ভারতের সেভেন সিস্টার্সখ্যাত অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত অরুণাচল রাজ্যকে আবার নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করেছে চীন। এই অরুণাচল প্রদেশকে ‘জাংনান’ নামে ডাকে চীন। 

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং দাবি করেছেন, “এই জাংনান চীনের ভূখণ্ড। ভারত যে অবৈধভাবে অরুণাচল প্রদেশ নামে একটি অঞ্চল গঠন করেছে, সেটিকে আমরা কখনো স্বীকৃতি দিইনি।”

পরে এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, “অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য ও অখণ্ড অংশ। চীনের অস্বীকারে এই বাস্তবতা বদলাবে না।”