ব্রেকিং
যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে বিশ্ববাজারে ভারতের বড় ধাক্কা

দুবাইয়ে এয়ারশোতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অস্ত্র ক্রেতাদের সামনে ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি যুদ্ধবিমান তেজস বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনা বড় এক ধাক্কা হয়ে এসেছে দেশটির রপ্তানি সম্ভাবনায় এই খাতে। 

আজ রবিবার (২৩ নভেম্বর) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগে, শুক্রবারের (২১ নভেম্বর) এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান পাইলট উইং কমান্ডার নমাংশ স্যল। দুর্ঘটনার কারণ এখনো জানা যায়নি।

মার্কিন বিশ্লেষক ডগলাস এ. বার্কি বলেন, দুবাইয়ের মতো বড় মঞ্চে এমন দুর্ঘটনার চিত্র অত্যন্ত নেতিবাচক। যদিও তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, নেতিবাচক প্রচারণার পরও তেজস আবার গতি ফিরে পাবে।

দুবাই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম এয়ারশো। এ শোতে এমন দুর্ঘটনা বর্তমানে খুবই বিরল। তবে, এর আগে প্যারিস এয়ারশোতেও রাশিয়ার সু-৩০ এবং মিগ-২৯ বিধ্বস্ত হয়েছিল। এরপরও রাশিয়ার সেই বিমানগুলো পরবর্তীতে বিভিন্ন দেশে বিক্রি হয়েছে।

১৯৮০-এর দশকে পুরনো মিগ-২১ প্রতিস্থাপনের লক্ষ্যে শুরু হওয়া তেজস প্রকল্পে ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ চলছে। রাষ্ট্রায়ত্ত হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড (হাল) ভারতের জন্য ১৮০টি উন্নত এমকে-১৪ ভ্যারিয়েন্ট তৈরির কথা রয়েছে। তবে, জিই এরোস্পেসের ইঞ্জিন সরবরাহ সমস্যায় ডেলিভারি পিছিয়ে যাচ্ছে।

হালের সদ্য-অবসর নেওয়া এক কর্মকর্তা জানান, এই দুর্ঘটনা আপাতত রপ্তানির সম্ভাবনা বন্ধ করে দিয়েছে। হালের লক্ষ্যবস্তু ছিল এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার কয়েকটি দেশ। মালয়েশিয়াতেও ২০২৩ সালে হালের অফিস খোলা হয়েছিল।

ভারতীয় বিমানবাহিনীতে বর্তমানে মাত্র ২৯ স্কোয়াড্রন রয়েছে। বাহিনীতে মোট অনুমোদিত সংখ্যা ৪২। এর মধ্যে মিগ-২৯, জাগুয়ার ও মিরাজ ২০০০-এর পুরনো সংস্করণগুলো আগামী বছরগুলোতে অবসরে যাচ্ছে।

ভারতীয় বিমানবাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, এগুলোর বিকল্প হিসেবেই ধরা হয়েছিল তেজসকে, কিন্তু উৎপাদন সমস্যার কারণে তা সময়মতো পূরণ করা যাচ্ছে না।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাৎক্ষণিক ঘাটতি পূরণে ভারত ফরাসি রাফাল, মার্কিন এফ-৩৫, অথবা রাশিয়ার সু-৫৭ কেনার বিষয় বিবেচনা করছে। তবে, বর্তমানে বিমানবাহিনীর বহরে থাকা প্রায় ৪০টি তেজসের সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।

বিশ্লেষক ওয়াল্টার লাডউইগ বলেন, তেজসের আন্তর্জাতিক বিক্রি যতটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ভবিষ্যৎ ভারতীয় যুদ্ধবিমান প্রকল্পের জন্য এটি যে শিল্প ও প্রযুক্তিগত ভিত্তি তৈরি করছে।