ব্রেকিং
হাদিকে হত্যাচেষ্টা: মোটরসাইকেলের মালিক হান্নান ৩ দিনের রিমান্ডে
কড়া নিরাপত্তায় আব্দুল হান্নানকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলির ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির মালিক আব্দুল হান্নানের তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার মহানগর হাকিম দিদারুল আলম এ আদেশ দেন।

আজ রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রিমান্ড আবেদনের শুনানিতে হান্নান বলেন, ‘আমি এ হোন্ডাটি মিরপুর মাজার রোড থেকে কিনেছিলাম। তবে হাতে সমস্যা হওয়ায় পরিবার থেকে বাইক চালাতে নিষেধ করেছিল। এজন্য বাসায় বাইকটি পড়ে ছিল। পড়ে থাকলে বাইকটি নষ্ট হয়ে যাবে ভেবে একটি শোরুমে বিক্রি করি এবং আমি নাম চেঞ্জ করে দেব বলেছিলাম। তারা দুই মাস আগে কল দিয়েছিল, কিন্তু অসুস্থ থাকায় মালিকানা পরিবর্তন করার জন্য যেতে পারিনি।

হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রবিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান এলাকা থেকে আব্দুল হান্নানকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে র‌্যাব।

ওই ঘটনায় মামলা না হওয়ায় ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় হান্নানকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে চার কারণ তুলে ধরে তার সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন পল্টন মডেল থানার এসআই সামিম হাসান। শুনানি নিয়ে ঢাকার মহানগর হাকিম দিদারুল আলম তিন দিনের রিমান্ড আদেশ দেন।

শুনানিকালে হান্নান কথা বলতে আদালতের অনুমতি চান। আদালত অনুমতি দিলে তিনি বলেন, ‘আমাকে গ্রেপ্তার করার পর র‍্যাবকে বলেছিলাম, শোরুমে নিয়ে চলেন তাহলে সবকিছু বেরিয়ে আসবে। কিন্তু তারা নিয়ে যায়নি। থানায় এসেও বলেছিলাম শোরুমে নিয়ে যেতে। তদন্ত করেন, সব বেরিয়ে যাবে।’

তখন বিচারক বলেন, ‘তদন্তে সহযোগিতা করবেন।’ এরপর হান্নানের রিমান্ড আদেশ দেন বিচারক।

হান্নানকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র, পলাতকদের নাম ঠিকানা সংগ্রহসহ অবস্থান ও গ্রেপ্তার, মূল রহস্য উদঘাটন ও তথ্য সম্পর্ক প্রবাহ, অর্থ সম্পর্ক প্রবাহ নির্ণয়ে এবং অস্ত্রটি কোথায় থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে তার উৎস জানতে রিমান্ড প্রয়োজন।

আবেদনে আরও বলা হয়, সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ঢাকা মেট্রো ল-৫৪-৬৩৭৫। র‍্যাব-২ বিআরটিএ অনুযায়ী মালিকানা যাচাই করে মালিক মো. আব্দুল হান্নানকে চিহ্নিত করে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি তুলে বলেন, মোটরসাইকেলের নম্বর পরীক্ষা করে দেখা গেছে, এর মালিক হান্নান। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমন করতে বিভিন্ন সময়ে এই মোটরসাইকেলটি ব্যবহার হয়েছে বলে জানা গেছে। এ আসামি গ্রেপ্তারের পর থেকে এ বিষয় এলোমেলো তথ্য দিয়েছেন।

মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী শুনানিতে বলেন, হাদিকে হত্যাচেষ্টায় যে হোন্ডা ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার করা হয়েছে। হোন্ডার মডেল তদন্ত কর্মকর্তা চিহ্নিত করেছেন। যাচা-ইবাছাই করা হয়েছে। হত্যাচেষ্টার রহস্য উদঘাটনের জন্য আসামি হান্নানের রিমান্ড প্রয়োজন। এ ঘটনা নিয়ে সারা দেশ উদ্বিগ্ন, সবাই তাকিয়ে আছে সামনের নির্বাচনে। হাদী একজন সৎ মানুষ। এ হত্যা চেষ্টার রহস্য উদঘাটনের জন্য আসামির সাত দিনের রিমান্ড প্রয়োজন।

আদালতে আব্দুল হান্নানের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।