ব্রেকিং
ইহুদি উৎসবে হামলা: সিডনিতে বাবা-ছেলের গুলিতে নিহত ১৫
সিডনিতে বাবা–ছেলের গুলিতে নিহত ১৫ জন নিহতের ঘটনাকে সন্ত্রাসী হামলা বলছে পুলিশ। ছবি: এএফপি

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মীয় উৎসব হানুকাহ উদযাপন চলাকালে গুলিতে ১৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১০ বছর বয়সী এক শিশু রয়েছে। পুলিশ বলছে, হামলাকারী দুজন বাবা ও ছেলে। ঘটনাকে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে বন্ডাই বিচে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারী গুলি চালায়। এতে বয়স ১০ থেকে ৮৭ বছরের মধ্যে মোট ১৫ জন নিহত হন। হামলার সময় সেখানে হাজারের বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীদের মধ্যে ৫০ বছর বয়সী সাজিদ আকরাম ঘটনাস্থলেই মারা যান। তিনি এ প্রায় ২৭ বছর আগে ১৯৯৮ সালে শিক্ষার্থী ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় এসেছিলেন। ২০০১ সাল থেকে তিনি স্থায়ী ভিসায় ছিলেন। তার ছেলে নাভিদ জন্মসূত্রে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। এই হামলার ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশের কমিশনার ম্যাল ল্যানিয়ন সংবাদ সম্মেলনে জানান, নিহত সাজিদ ‘ক্যাটাগরি এবি’ লাইসেন্সধারী ছিলেন, যা দীর্ঘনাল আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অনুমতি দেয়। ২০১৫ সাল থেকে তার এই লাইসেন্স ছিল। ম্যাল ল্যানিয়ন বলেন, লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর যোগ্যতা কঠোরভাবে যাচাই করা হয়।

পুলিশের ভাষ্য, বন্ডাই বিচে হানুকাহ উৎসব উপলক্ষে চলা আয়োজনে ইহুদি সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করেই হামলাটি চালানো হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ হামলাকে ‘সম্পূর্ণ নৃশংস’ উল্লেখ করে বলেন, এতে ইচ্ছাকৃতভাবে ইহুদি সম্প্রদায়কে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি অংয়ের সঙ্গে কথা বলে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইহুদি বিদ্বেষের সঙ্গে কোনো ধরনের আপোষ হতে পারে না; একে অবশ্যই মোকাবিলা ও পরাজিত করতে হবে।

অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বের অন্যতম কঠোর বন্দুক আইন কার্যকর রয়েছে। ১৯৯৬ সালে তাসমানিয়ার পোর্ট আর্থারে গণহত্যার পর ব্যক্তিগত মালিকানাধীন আগ্নেয়াস্ত্র— বিশেষ করে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। তবু সাম্প্রতিক এই হামলার পর আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স আইন আরও কঠোর করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার ক্রিস মিনস।

তিনি বলেন, সমাজে ব্যবহারিক প্রয়োজন নেই এমন ভীতিকর অস্ত্রের প্রাপ্যতা আরও সীমিত করতে আইন প্রণয়ন দরকার। একই সঙ্গে তিনি নিহতদের স্মরণে বন্ডাই প্যাভিলিয়নে স্থাপিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং রক্তদানে এগিয়ে আসার জন্য নাগরিকদের উৎসাহ দেন।

ঘটনার পর বন্ডাই বিচ এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, দুই বন্দুকধারীর একজন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন এবং অন্যজনকে আহত অবস্থায় হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।