ব্রেকিং
ঘেরাও কর্মসূচি থেকে সচিবালয়ে ডাকসু প্রতিনিধিরা
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম। ছবি: হারুন অর রশীদ

ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারসহ বিভিন্ন দাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি শুরু করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)।

আজ মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা ডাকসুর সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিয়ে কর্মসূচি শুরু করেন। এরপর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কার্যালয়ের দিকে রওনা দেন তারা। এ সময় দোয়েল চত্বর ও হাইকোর্ট মোড়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। পরে পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কার্যালয়ের দিকে অগ্রসর হন ডাকসু নেতারা।

পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পথে ডাকসুর প্রতিনিধিরা। ছবি: হারুন অর রশীদ
পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পথে ডাকসুর প্রতিনিধিরা। ছবি: হারুন অর রশীদ

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েমের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি দল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করতে সচিবালয়ে ঢুকেছেন।

ডাকসু নেতারা তিনটি দাবি জানিয়েছেন। তাদের প্রথম দাবি, ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের সঙ্গে জড়িত প্রত্যক্ষ হামলাকারী, পরিকল্পনাকারী ও সহায়তাকারী সকল সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করতে হবে। গোয়েন্দা সংস্থাসহ রাষ্ট্রের সকল সংশ্লিষ্ট অর্গানকে দ্রুত জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে এবং যাদের গাফিলতি প্রমাণিত হবে, তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। একই সঙ্গে যারা এই হামলাকে সমর্থন যুগিয়েছে, ওসমান হাদি ও জুলাই বিপ্লবীদের হত্যাযোগ্য করে তুলেছে, সেই কালচারাল ফ্যাসিস্টদের সামাজিকভাবে সম্পূর্ণ বয়কট করতে হবে। এসব ব্যবস্থা অনতিবিলম্বে দৃশ্যমান করতে হবে।

দ্বিতীয় দাবি, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিষিদ্ধ লীগের বিরুদ্ধে এলাকাভিত্তিক চিরুনি অভিযান শুরু করতে হবে। নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের সকল সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করতে হবে এবং সব ধরনের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। এ বিষয়ে সরকারের অবহেলা আমরা আর সহ্য করব না।

তৃতীয় দাবি, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে প্রথম ও অপরিহার্য পদক্ষেপ হিসেবে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে প্রদত্ত রায় কার্যকর করতে হবে। গণহত্যাকারী সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়ার প্রতিবাদে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করতে হবে। অভিযুক্তদের ফেরত না দেওয়ার আগ পর্যন্ত কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করা যাবে না।

এই দাবি অনতিবিলম্বে না মানা হলে এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান পরিবর্তন না দেখাতে পারলে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।

আজ দুপুর ১২টায় কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে অংশগ্রহণকারীরা আসতে সময় লাগায় কর্মসূচি দেরিতে শুরু হয়।

দুপুর ১টা নাগাদ বিক্ষোভকারীরা ডাকসুর সামনে স্লোগান দিতে থাকেন এবং জমায়েত বাড়তে থাকে। জমায়েতে উপস্থিত আছেন ডাকসুর সহ-সভাপতি, সহ-সাধারণ সম্পাদক, সাহিত্য ও সংস্কৃতি, সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদকসহ বিভিন্ন হল সংসদ নেতারা।

প্রসঙ্গত, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার, দেশব্যাপী অভিযান চালিয়ে সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাওয়ের আহ্বান জানান ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম। রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড একাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে এ আহ্বান জানান তিনি।

পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমাদের ভাই ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার, দেশব্যাপী অভিযান চালিয়ে সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং নিষিদ্ধ লীগের সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও।’

দুপুর ১২টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুতে জমায়েত হবে জানিয়ে তিনি ছাত্র-জনতাকে স্বতস্ফূর্তভাবে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানান।