হাসিনা ছাড়াও প্লট দুর্নীতি মামলায় আরো যারা সাজা পেলো
- খালাস পেয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার

হাসিনা ছাড়াও প্লট দুর্নীতি মামলায় আরো যারা সাজা পেলো
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর পূর্বাচলে রাজউকের প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুদকের করা তিন মামলায় আদালত ৭ বছর করে মোট ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ ছাড়া এক মামলায় তার ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদকে (জয়) পাঁচ বছর, আরেক মামলায় মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও ১৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকারকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বেলা ১১টা ২৩ মিনিটে ঢাকার বিশেষ জজ-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এজলাসে এসে দুদকের দায়ের করা পৃথক তিন মামলার রায় ঘোষণা করেন। এসব মামলায় শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ মোট ২৩ জন আসামি রয়েছেন।
আসামিদের সাজার বিবরণ
৩ মামলায় ৭ বছর করে মোট ২১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড পেয়েছেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শেখ হাসিনা। এছাড়াও এক লাখ টাকা করে মোট ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে দেড় বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন তিনি।
এদিকে এক মামলায় তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
এছাড়া শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে এক মামলায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
অন্যান্য আসামিদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিনকে ২ মামলায় ৬ বছর করে মোট ১২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া এক লাখ টাকা করে মোট ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৬ মাস করে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদকে ৩ মামলায় ৬ বছর করে মোট ১৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা করে মোট ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে দেড় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকারকে ৩ মামলায় ৬ বছর করে মোট ১৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা করে মোট ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে দেড় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিনকে ৩ মামলায় ৬ বছর করে মোট ১৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা করে মোট ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে দেড় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদারকে ৩ মামলায় ১ বছর করে মোট ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড; পাঁচ, দশ ও পাঁচ হাজার টাকা করে মোট ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ মাস করে ৩ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞাকে ৩ মামলায় ৫ বছর করে মোট ১৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, পঞ্চাশ হাজার টাকা করে মোট দেড় লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৩ মাস করে ৯ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রাজউকের সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীনকে ৩ মামলায় ৩ বছর করে মোট ৯ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা করে মোট ষাট হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ২ মাস করে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মেজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরীকে (অব.) ৩ মামলায় ৩ বছর করে মোট ৯ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা করে মোট ষাট হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ২ মাস করে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রাজউকের সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদকে এক মামলায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাসকে ২ মামলায় ৩ বছর করে মোট ৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ২ মাস করে ৪ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রাজউকের সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. নুরুল ইসলাম ২ মামলায় ৩ বছর করে মোট ৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ২ মাস করে ৪ মাসের কারাদণ্ড পেয়েছেন।
রাজউকের পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম এক মামলায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাস কারাদণ্ড পেয়েছেন।
রাজউকের পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) মো. কামরুল ইসলামকে এক মামলায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রাজউকের সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) মো. হাফিজুর রহমানকে এক মামলায় ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাস কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রাজউকের সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) মো. হাবিবুর রহমান সবুজ এক মামলায় ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাস কারাদণ্ড পেয়েছেন।
রাজউকের সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) নায়েব আলী শরীফ ২ মামলায় ১ বছর করে মোট ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা করে মোট ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ মাস করে ২ মাসের কারাদণ্ড পেয়েছেন।
রাজউকের সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) মাজহারুল ইসলামকে এক মামলায় ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে ৩ মামলায় ১ বছর করে মোট ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা করে মোট ১৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ মাস করে ৩ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে আসামি খুরশীদ আলমকে রায় ঘোষণার সময় আদালতে তোলা হয়। এরপর সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। বাকি আসামিরা পলাতক থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
রায় ঘোষণার পর দুদক প্রসিকিউটর মইনুল হাসান প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, শেখ হাসিনাকে পৃথক তিন মামলায় ৭ বছর করে ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া প্রত্যেক মামলায় ১ লাখ টাকা করে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে, অনাদায়ে ৬ মাস করে ১৮ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আমরা এ রায়ে খুশি নই।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম প্রত্যেক মামলায় শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে। দুদকের সাথে কথা বলে আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাব কি না সিদ্ধান্ত নেব। তবে দোষী প্রমাণিত হলেও সর্বোচ্চ সাজা না হওয়ায় আমরা এ রায়ে অখুশি হয়েছি।
এর আগে গত রোববার এসব মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা একমাত্র আসামি রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন আদালত। অপর আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন হয়নি। তারা আত্মপক্ষ শুনানিতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করতে পারেননি।
আদালত সূত্রে জানা যায়, প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে পৃথক ৬ মামলা করে দুদক। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়।
গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। অপরদিকে বাকি ৩ মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলম আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। অযোগ্য হলেও তারা পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরে ১০ কাঠা করে প্লট বরাদ্দ নেন।

রাজধানীর পূর্বাচলে রাজউকের প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুদকের করা তিন মামলায় আদালত ৭ বছর করে মোট ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ ছাড়া এক মামলায় তার ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদকে (জয়) পাঁচ বছর, আরেক মামলায় মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও ১৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকারকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বেলা ১১টা ২৩ মিনিটে ঢাকার বিশেষ জজ-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এজলাসে এসে দুদকের দায়ের করা পৃথক তিন মামলার রায় ঘোষণা করেন। এসব মামলায় শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ মোট ২৩ জন আসামি রয়েছেন।
আসামিদের সাজার বিবরণ
৩ মামলায় ৭ বছর করে মোট ২১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড পেয়েছেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শেখ হাসিনা। এছাড়াও এক লাখ টাকা করে মোট ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে দেড় বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন তিনি।
এদিকে এক মামলায় তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
এছাড়া শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে এক মামলায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
অন্যান্য আসামিদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিনকে ২ মামলায় ৬ বছর করে মোট ১২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া এক লাখ টাকা করে মোট ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৬ মাস করে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদকে ৩ মামলায় ৬ বছর করে মোট ১৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা করে মোট ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে দেড় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকারকে ৩ মামলায় ৬ বছর করে মোট ১৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা করে মোট ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে দেড় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিনকে ৩ মামলায় ৬ বছর করে মোট ১৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা করে মোট ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে দেড় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদারকে ৩ মামলায় ১ বছর করে মোট ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড; পাঁচ, দশ ও পাঁচ হাজার টাকা করে মোট ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ মাস করে ৩ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞাকে ৩ মামলায় ৫ বছর করে মোট ১৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, পঞ্চাশ হাজার টাকা করে মোট দেড় লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৩ মাস করে ৯ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রাজউকের সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীনকে ৩ মামলায় ৩ বছর করে মোট ৯ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা করে মোট ষাট হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ২ মাস করে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মেজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরীকে (অব.) ৩ মামলায় ৩ বছর করে মোট ৯ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা করে মোট ষাট হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ২ মাস করে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রাজউকের সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদকে এক মামলায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাসকে ২ মামলায় ৩ বছর করে মোট ৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ২ মাস করে ৪ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রাজউকের সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. নুরুল ইসলাম ২ মামলায় ৩ বছর করে মোট ৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ২ মাস করে ৪ মাসের কারাদণ্ড পেয়েছেন।
রাজউকের পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম এক মামলায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাস কারাদণ্ড পেয়েছেন।
রাজউকের পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) মো. কামরুল ইসলামকে এক মামলায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রাজউকের সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) মো. হাফিজুর রহমানকে এক মামলায় ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাস কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রাজউকের সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) মো. হাবিবুর রহমান সবুজ এক মামলায় ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাস কারাদণ্ড পেয়েছেন।
রাজউকের সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) নায়েব আলী শরীফ ২ মামলায় ১ বছর করে মোট ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা করে মোট ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ মাস করে ২ মাসের কারাদণ্ড পেয়েছেন।
রাজউকের সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) মাজহারুল ইসলামকে এক মামলায় ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে ৩ মামলায় ১ বছর করে মোট ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা করে মোট ১৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ মাস করে ৩ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে আসামি খুরশীদ আলমকে রায় ঘোষণার সময় আদালতে তোলা হয়। এরপর সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। বাকি আসামিরা পলাতক থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
রায় ঘোষণার পর দুদক প্রসিকিউটর মইনুল হাসান প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, শেখ হাসিনাকে পৃথক তিন মামলায় ৭ বছর করে ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া প্রত্যেক মামলায় ১ লাখ টাকা করে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে, অনাদায়ে ৬ মাস করে ১৮ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আমরা এ রায়ে খুশি নই।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম প্রত্যেক মামলায় শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে। দুদকের সাথে কথা বলে আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাব কি না সিদ্ধান্ত নেব। তবে দোষী প্রমাণিত হলেও সর্বোচ্চ সাজা না হওয়ায় আমরা এ রায়ে অখুশি হয়েছি।
এর আগে গত রোববার এসব মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা একমাত্র আসামি রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন আদালত। অপর আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন হয়নি। তারা আত্মপক্ষ শুনানিতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করতে পারেননি।
আদালত সূত্রে জানা যায়, প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে পৃথক ৬ মামলা করে দুদক। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়।
গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। অপরদিকে বাকি ৩ মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলম আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। অযোগ্য হলেও তারা পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরে ১০ কাঠা করে প্লট বরাদ্দ নেন।

হাসিনা ছাড়াও প্লট দুর্নীতি মামলায় আরো যারা সাজা পেলো
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর পূর্বাচলে রাজউকের প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুদকের করা তিন মামলায় আদালত ৭ বছর করে মোট ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ ছাড়া এক মামলায় তার ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদকে (জয়) পাঁচ বছর, আরেক মামলায় মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও ১৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকারকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বেলা ১১টা ২৩ মিনিটে ঢাকার বিশেষ জজ-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এজলাসে এসে দুদকের দায়ের করা পৃথক তিন মামলার রায় ঘোষণা করেন। এসব মামলায় শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ মোট ২৩ জন আসামি রয়েছেন।
আসামিদের সাজার বিবরণ
৩ মামলায় ৭ বছর করে মোট ২১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড পেয়েছেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শেখ হাসিনা। এছাড়াও এক লাখ টাকা করে মোট ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে দেড় বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন তিনি।
এদিকে এক মামলায় তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
এছাড়া শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে এক মামলায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
অন্যান্য আসামিদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিনকে ২ মামলায় ৬ বছর করে মোট ১২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া এক লাখ টাকা করে মোট ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৬ মাস করে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদকে ৩ মামলায় ৬ বছর করে মোট ১৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা করে মোট ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে দেড় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকারকে ৩ মামলায় ৬ বছর করে মোট ১৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা করে মোট ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে দেড় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিনকে ৩ মামলায় ৬ বছর করে মোট ১৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা করে মোট ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে দেড় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদারকে ৩ মামলায় ১ বছর করে মোট ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড; পাঁচ, দশ ও পাঁচ হাজার টাকা করে মোট ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ মাস করে ৩ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞাকে ৩ মামলায় ৫ বছর করে মোট ১৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, পঞ্চাশ হাজার টাকা করে মোট দেড় লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৩ মাস করে ৯ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রাজউকের সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীনকে ৩ মামলায় ৩ বছর করে মোট ৯ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা করে মোট ষাট হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ২ মাস করে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মেজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরীকে (অব.) ৩ মামলায় ৩ বছর করে মোট ৯ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা করে মোট ষাট হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ২ মাস করে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রাজউকের সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদকে এক মামলায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাসকে ২ মামলায় ৩ বছর করে মোট ৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ২ মাস করে ৪ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রাজউকের সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. নুরুল ইসলাম ২ মামলায় ৩ বছর করে মোট ৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ২ মাস করে ৪ মাসের কারাদণ্ড পেয়েছেন।
রাজউকের পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম এক মামলায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাস কারাদণ্ড পেয়েছেন।
রাজউকের পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) মো. কামরুল ইসলামকে এক মামলায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রাজউকের সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) মো. হাফিজুর রহমানকে এক মামলায় ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাস কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রাজউকের সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) মো. হাবিবুর রহমান সবুজ এক মামলায় ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাস কারাদণ্ড পেয়েছেন।
রাজউকের সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) নায়েব আলী শরীফ ২ মামলায় ১ বছর করে মোট ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা করে মোট ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ মাস করে ২ মাসের কারাদণ্ড পেয়েছেন।
রাজউকের সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) মাজহারুল ইসলামকে এক মামলায় ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে ৩ মামলায় ১ বছর করে মোট ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা করে মোট ১৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ মাস করে ৩ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে আসামি খুরশীদ আলমকে রায় ঘোষণার সময় আদালতে তোলা হয়। এরপর সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। বাকি আসামিরা পলাতক থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
রায় ঘোষণার পর দুদক প্রসিকিউটর মইনুল হাসান প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, শেখ হাসিনাকে পৃথক তিন মামলায় ৭ বছর করে ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া প্রত্যেক মামলায় ১ লাখ টাকা করে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে, অনাদায়ে ৬ মাস করে ১৮ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আমরা এ রায়ে খুশি নই।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম প্রত্যেক মামলায় শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে। দুদকের সাথে কথা বলে আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাব কি না সিদ্ধান্ত নেব। তবে দোষী প্রমাণিত হলেও সর্বোচ্চ সাজা না হওয়ায় আমরা এ রায়ে অখুশি হয়েছি।
এর আগে গত রোববার এসব মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা একমাত্র আসামি রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন আদালত। অপর আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন হয়নি। তারা আত্মপক্ষ শুনানিতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করতে পারেননি।
আদালত সূত্রে জানা যায়, প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে পৃথক ৬ মামলা করে দুদক। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়।
গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। অপরদিকে বাকি ৩ মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলম আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। অযোগ্য হলেও তারা পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরে ১০ কাঠা করে প্লট বরাদ্দ নেন।