পরিকল্পনা না থাকায় কারণে ক্রাইসিস তৈরি হয় : বিশেষজ্ঞ
পেঁয়াজে নাস্তানাবুদ ভোক্তা

পেঁয়াজে নাস্তানাবুদ ভোক্তা
মরিয়ম সেঁজুতি

বাজারে কমছেই না পেঁয়াজের ঝাঁজ। একমাসের ব্যবধানে পণ্যটির দাম বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। দাম সহনীয় রাখতে ভারতসহ কয়েকটি দেশ থেকে আমদানির ঘোষণা দেয় সরকার। তবে, আবেদনের সংখ্যার তুলনায় খুব একটা হয়নি ঋণপত্র (এলসি) খোলা। দুই হাজার আবেদন থেকে এলসি খোলা হয়েছে মাত্র দুইশ টনের।
ভোক্তারা বলছেন, দাম কিছুটা কমে পেঁয়াজের বাজারে স্বস্তি ফিরছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীরা ফের বাজার অস্থির করার পাঁয়তারা করছেন। তবে বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ একদমই কমে গেছে। সরবরাহ সংকটে পাইকারিতে দাম বাড়ায় খুচরায়ও প্রভাব পড়েছে। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসা পর্যন্ত অপেক্ষার পরামর্শ বিশ্লেষকদের। অবশ্য বাজারে মুড়িকাটা নতুন পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে। যদিও সেটা পরিমাণে খুব অল্প। আর পাতাসহ পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়।
দেখা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ফাঁকা বুলি, শুল্ক উঠিয়ে দিয়ে আমদানির ঘোষণা, কিছুতেই কিছু হয়নি। রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পাইকারিতে এখন প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০৪-১০৫ টাকায়, খুচরায় যার দাম ঠেকছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত। উৎপাদন ও চাহিদায় খুব একটা ফারাক না থাকলেও প্রতি বছরই শেষ দিকে এসে বাড়ে পেঁয়াজের দাম। এর বড় কারণ, এ সময়টাতেই শেষ হতে থাকে পণ্যটির মৌসুম। ফলে সংরক্ষণের সুবিধার অভাবে তৈরি হয় ঘাটতি।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন জানান, সমস্যা সমাধানের উদ্যোগটা আগে থেকেই নিতে হবে। শেষ সময় এসে কোনো উদ্যোগ নিলে ভোক্তরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করে। মানুষের পকেট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার যে প্রবণতা, এটি প্রশাসন বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানে। তাই আগে থেকে তাদের উদ্যোগ নেয়া দরকার ছিল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ফোকাস ঠিক করা দরকার, কখন আমদানি উন্মুক্ত করা যাবে, কখন বন্ধ করা হবে।
নাজের হোসাইন আরো বলেন, ক্যালেন্ডার অনুযায়ী একটি পরিকল্পনা থাকা দরকার। পরিকল্পনা না থাকার কারণে যখন ক্রাইসিস তৈরি হয়, তখন আমাদের টনক নড়ে। এটার কারণে ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেয়ে যান। আমাদের মজুদ পণ্যকে একই চ্যানেলে ডিসট্রিবিউশনে নিয়ে আসা যায় কিনা, সেই উদ্যোগুলো দেখি না।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৭০ থেকে ৮০ টাকার পেঁয়াজ নভেম্বর মাসে হঠাৎ করে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় ঠেকে। পুরো মাস সেই উচ্চমূল্যে স্থির হয়ে যায়। শেষের দিকে কেজিতে ১০ টাকা কমে ১১০ টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু নতুন পেঁয়াজ বাজারে উঠলেও গতকাল হঠাৎ করে পুরোনো পেঁয়াজের ঝাঁঝ বেড়ে গেছে। ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় ঠেকেছে।
কমলাপুর এজিবি কলোনী কাচা বাজারের মনিরুল হাসানসহ কয়েকজন বিক্রেতা জানান, মৌসুম শেষ। গতকাল দাম বেড়ে গেছে। আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। পাবনার বড় সাইজের পেঁয়াজ ১৩০ টাকা ও ফরিদপুরের পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি। আগের মতোই আদা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, রসুন ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা ও আলুর কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা ও নতুন আলু ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান।
নাজের হোসাইন বলেন, ক্যালেন্ডার অনুযায়ী একটি পরিকল্পনা থাকা দরকার। পরিকল্পনা না থাকার কারণে যখন ক্রাইসিস তৈরি হয়, তখন আমাদের টনক নড়ে। এটার কারণে ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেয়ে যান। আমাদের মজুদ পণ্যকে একই চ্যানেলে ডিসট্রিবিউশনে নিয়ে আসা যায় কিনা, সেই উদ্যোগুলো দেখি না।
ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গেলো ৩ বছর ধরেই নভেম্বরে শতকের ঘরে পেয়াজের দর। ২০২৩ এর নভেম্বরে পেঁয়াজের গড় দাম ছিলো ১১৫ টাকা, ২০২৪ এ এসে যা হয় ১৩০ ও চলতি বছরে দাঁড়ায় ১৪০ টাকায়। ফলে ভরসা করতে হয় আমদানিতে, যার প্রায় শতভাগই আসে ভারত থেকে। যেখানেই সংকটের সূত্রপাত।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এই অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত গেলো বছরের একই সময়ের তুলনায় পেঁয়াজ আমদানি নেমেছে ২০ ভাগের ১ ভাগে। গেলো অর্থবছরে যেখানে অক্টোবর পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল ২ লাখ ৪৬ হাজার টন, সেখানে এই অর্থবছরে এখনো পর্যন্ত হয়েছে মাত্র ১৩ হাজার টন। একই সময়ে এলসি বা ঋণপত্র খোলা কমেছে প্রায় ৯৯ শতাংশ। ২০২৪ অক্টোবর পর্যন্ত হয়েছিলো ১ লাখ ২৮ হাজার ৩৭ মেট্রিক টনের, যা এবার মাত্র ২০৩ টন। যদিও এলসি খোলার জন্য এই সময়ে আবেদন জমা পড়েছে ২৮শ’র মতো, যা মূলত রমজান ঘিরেই করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গেলো অর্থবছরে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৮২ হাজার টন। আর উতপাদন হয়েছে ৩২ লাখ টনের মত।

বাজারে কমছেই না পেঁয়াজের ঝাঁজ। একমাসের ব্যবধানে পণ্যটির দাম বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। দাম সহনীয় রাখতে ভারতসহ কয়েকটি দেশ থেকে আমদানির ঘোষণা দেয় সরকার। তবে, আবেদনের সংখ্যার তুলনায় খুব একটা হয়নি ঋণপত্র (এলসি) খোলা। দুই হাজার আবেদন থেকে এলসি খোলা হয়েছে মাত্র দুইশ টনের।
ভোক্তারা বলছেন, দাম কিছুটা কমে পেঁয়াজের বাজারে স্বস্তি ফিরছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীরা ফের বাজার অস্থির করার পাঁয়তারা করছেন। তবে বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ একদমই কমে গেছে। সরবরাহ সংকটে পাইকারিতে দাম বাড়ায় খুচরায়ও প্রভাব পড়েছে। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসা পর্যন্ত অপেক্ষার পরামর্শ বিশ্লেষকদের। অবশ্য বাজারে মুড়িকাটা নতুন পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে। যদিও সেটা পরিমাণে খুব অল্প। আর পাতাসহ পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়।
দেখা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ফাঁকা বুলি, শুল্ক উঠিয়ে দিয়ে আমদানির ঘোষণা, কিছুতেই কিছু হয়নি। রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পাইকারিতে এখন প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০৪-১০৫ টাকায়, খুচরায় যার দাম ঠেকছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত। উৎপাদন ও চাহিদায় খুব একটা ফারাক না থাকলেও প্রতি বছরই শেষ দিকে এসে বাড়ে পেঁয়াজের দাম। এর বড় কারণ, এ সময়টাতেই শেষ হতে থাকে পণ্যটির মৌসুম। ফলে সংরক্ষণের সুবিধার অভাবে তৈরি হয় ঘাটতি।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন জানান, সমস্যা সমাধানের উদ্যোগটা আগে থেকেই নিতে হবে। শেষ সময় এসে কোনো উদ্যোগ নিলে ভোক্তরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করে। মানুষের পকেট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার যে প্রবণতা, এটি প্রশাসন বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানে। তাই আগে থেকে তাদের উদ্যোগ নেয়া দরকার ছিল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ফোকাস ঠিক করা দরকার, কখন আমদানি উন্মুক্ত করা যাবে, কখন বন্ধ করা হবে।
নাজের হোসাইন আরো বলেন, ক্যালেন্ডার অনুযায়ী একটি পরিকল্পনা থাকা দরকার। পরিকল্পনা না থাকার কারণে যখন ক্রাইসিস তৈরি হয়, তখন আমাদের টনক নড়ে। এটার কারণে ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেয়ে যান। আমাদের মজুদ পণ্যকে একই চ্যানেলে ডিসট্রিবিউশনে নিয়ে আসা যায় কিনা, সেই উদ্যোগুলো দেখি না।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৭০ থেকে ৮০ টাকার পেঁয়াজ নভেম্বর মাসে হঠাৎ করে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় ঠেকে। পুরো মাস সেই উচ্চমূল্যে স্থির হয়ে যায়। শেষের দিকে কেজিতে ১০ টাকা কমে ১১০ টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু নতুন পেঁয়াজ বাজারে উঠলেও গতকাল হঠাৎ করে পুরোনো পেঁয়াজের ঝাঁঝ বেড়ে গেছে। ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় ঠেকেছে।
কমলাপুর এজিবি কলোনী কাচা বাজারের মনিরুল হাসানসহ কয়েকজন বিক্রেতা জানান, মৌসুম শেষ। গতকাল দাম বেড়ে গেছে। আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। পাবনার বড় সাইজের পেঁয়াজ ১৩০ টাকা ও ফরিদপুরের পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি। আগের মতোই আদা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, রসুন ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা ও আলুর কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা ও নতুন আলু ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান।
নাজের হোসাইন বলেন, ক্যালেন্ডার অনুযায়ী একটি পরিকল্পনা থাকা দরকার। পরিকল্পনা না থাকার কারণে যখন ক্রাইসিস তৈরি হয়, তখন আমাদের টনক নড়ে। এটার কারণে ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেয়ে যান। আমাদের মজুদ পণ্যকে একই চ্যানেলে ডিসট্রিবিউশনে নিয়ে আসা যায় কিনা, সেই উদ্যোগুলো দেখি না।
ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গেলো ৩ বছর ধরেই নভেম্বরে শতকের ঘরে পেয়াজের দর। ২০২৩ এর নভেম্বরে পেঁয়াজের গড় দাম ছিলো ১১৫ টাকা, ২০২৪ এ এসে যা হয় ১৩০ ও চলতি বছরে দাঁড়ায় ১৪০ টাকায়। ফলে ভরসা করতে হয় আমদানিতে, যার প্রায় শতভাগই আসে ভারত থেকে। যেখানেই সংকটের সূত্রপাত।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এই অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত গেলো বছরের একই সময়ের তুলনায় পেঁয়াজ আমদানি নেমেছে ২০ ভাগের ১ ভাগে। গেলো অর্থবছরে যেখানে অক্টোবর পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল ২ লাখ ৪৬ হাজার টন, সেখানে এই অর্থবছরে এখনো পর্যন্ত হয়েছে মাত্র ১৩ হাজার টন। একই সময়ে এলসি বা ঋণপত্র খোলা কমেছে প্রায় ৯৯ শতাংশ। ২০২৪ অক্টোবর পর্যন্ত হয়েছিলো ১ লাখ ২৮ হাজার ৩৭ মেট্রিক টনের, যা এবার মাত্র ২০৩ টন। যদিও এলসি খোলার জন্য এই সময়ে আবেদন জমা পড়েছে ২৮শ’র মতো, যা মূলত রমজান ঘিরেই করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গেলো অর্থবছরে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৮২ হাজার টন। আর উতপাদন হয়েছে ৩২ লাখ টনের মত।

পেঁয়াজে নাস্তানাবুদ ভোক্তা
মরিয়ম সেঁজুতি

বাজারে কমছেই না পেঁয়াজের ঝাঁজ। একমাসের ব্যবধানে পণ্যটির দাম বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। দাম সহনীয় রাখতে ভারতসহ কয়েকটি দেশ থেকে আমদানির ঘোষণা দেয় সরকার। তবে, আবেদনের সংখ্যার তুলনায় খুব একটা হয়নি ঋণপত্র (এলসি) খোলা। দুই হাজার আবেদন থেকে এলসি খোলা হয়েছে মাত্র দুইশ টনের।
ভোক্তারা বলছেন, দাম কিছুটা কমে পেঁয়াজের বাজারে স্বস্তি ফিরছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীরা ফের বাজার অস্থির করার পাঁয়তারা করছেন। তবে বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ একদমই কমে গেছে। সরবরাহ সংকটে পাইকারিতে দাম বাড়ায় খুচরায়ও প্রভাব পড়েছে। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসা পর্যন্ত অপেক্ষার পরামর্শ বিশ্লেষকদের। অবশ্য বাজারে মুড়িকাটা নতুন পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে। যদিও সেটা পরিমাণে খুব অল্প। আর পাতাসহ পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়।
দেখা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ফাঁকা বুলি, শুল্ক উঠিয়ে দিয়ে আমদানির ঘোষণা, কিছুতেই কিছু হয়নি। রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পাইকারিতে এখন প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০৪-১০৫ টাকায়, খুচরায় যার দাম ঠেকছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত। উৎপাদন ও চাহিদায় খুব একটা ফারাক না থাকলেও প্রতি বছরই শেষ দিকে এসে বাড়ে পেঁয়াজের দাম। এর বড় কারণ, এ সময়টাতেই শেষ হতে থাকে পণ্যটির মৌসুম। ফলে সংরক্ষণের সুবিধার অভাবে তৈরি হয় ঘাটতি।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন জানান, সমস্যা সমাধানের উদ্যোগটা আগে থেকেই নিতে হবে। শেষ সময় এসে কোনো উদ্যোগ নিলে ভোক্তরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করে। মানুষের পকেট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার যে প্রবণতা, এটি প্রশাসন বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানে। তাই আগে থেকে তাদের উদ্যোগ নেয়া দরকার ছিল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ফোকাস ঠিক করা দরকার, কখন আমদানি উন্মুক্ত করা যাবে, কখন বন্ধ করা হবে।
নাজের হোসাইন আরো বলেন, ক্যালেন্ডার অনুযায়ী একটি পরিকল্পনা থাকা দরকার। পরিকল্পনা না থাকার কারণে যখন ক্রাইসিস তৈরি হয়, তখন আমাদের টনক নড়ে। এটার কারণে ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেয়ে যান। আমাদের মজুদ পণ্যকে একই চ্যানেলে ডিসট্রিবিউশনে নিয়ে আসা যায় কিনা, সেই উদ্যোগুলো দেখি না।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৭০ থেকে ৮০ টাকার পেঁয়াজ নভেম্বর মাসে হঠাৎ করে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় ঠেকে। পুরো মাস সেই উচ্চমূল্যে স্থির হয়ে যায়। শেষের দিকে কেজিতে ১০ টাকা কমে ১১০ টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু নতুন পেঁয়াজ বাজারে উঠলেও গতকাল হঠাৎ করে পুরোনো পেঁয়াজের ঝাঁঝ বেড়ে গেছে। ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় ঠেকেছে।
কমলাপুর এজিবি কলোনী কাচা বাজারের মনিরুল হাসানসহ কয়েকজন বিক্রেতা জানান, মৌসুম শেষ। গতকাল দাম বেড়ে গেছে। আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। পাবনার বড় সাইজের পেঁয়াজ ১৩০ টাকা ও ফরিদপুরের পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি। আগের মতোই আদা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, রসুন ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা ও আলুর কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা ও নতুন আলু ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান।
নাজের হোসাইন বলেন, ক্যালেন্ডার অনুযায়ী একটি পরিকল্পনা থাকা দরকার। পরিকল্পনা না থাকার কারণে যখন ক্রাইসিস তৈরি হয়, তখন আমাদের টনক নড়ে। এটার কারণে ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেয়ে যান। আমাদের মজুদ পণ্যকে একই চ্যানেলে ডিসট্রিবিউশনে নিয়ে আসা যায় কিনা, সেই উদ্যোগুলো দেখি না।
ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গেলো ৩ বছর ধরেই নভেম্বরে শতকের ঘরে পেয়াজের দর। ২০২৩ এর নভেম্বরে পেঁয়াজের গড় দাম ছিলো ১১৫ টাকা, ২০২৪ এ এসে যা হয় ১৩০ ও চলতি বছরে দাঁড়ায় ১৪০ টাকায়। ফলে ভরসা করতে হয় আমদানিতে, যার প্রায় শতভাগই আসে ভারত থেকে। যেখানেই সংকটের সূত্রপাত।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এই অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত গেলো বছরের একই সময়ের তুলনায় পেঁয়াজ আমদানি নেমেছে ২০ ভাগের ১ ভাগে। গেলো অর্থবছরে যেখানে অক্টোবর পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল ২ লাখ ৪৬ হাজার টন, সেখানে এই অর্থবছরে এখনো পর্যন্ত হয়েছে মাত্র ১৩ হাজার টন। একই সময়ে এলসি বা ঋণপত্র খোলা কমেছে প্রায় ৯৯ শতাংশ। ২০২৪ অক্টোবর পর্যন্ত হয়েছিলো ১ লাখ ২৮ হাজার ৩৭ মেট্রিক টনের, যা এবার মাত্র ২০৩ টন। যদিও এলসি খোলার জন্য এই সময়ে আবেদন জমা পড়েছে ২৮শ’র মতো, যা মূলত রমজান ঘিরেই করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গেলো অর্থবছরে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৮২ হাজার টন। আর উতপাদন হয়েছে ৩২ লাখ টনের মত।