ব্রেকিং
রাতভর শিক্ষা ভবনের সামনে ৭ কলেজ শিক্ষার্থীরা, আজও অবস্থান কর্মসূচি
রাতভর শিক্ষা ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

দিনভর অবরোধ কর্মসূচি পালন করার পর রাতেও শিক্ষা ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে গেছেন সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির চূড়ান্ত অধ্যাদেশ জারির দাবিতে রবিবার (০৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই তারা রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করেন। পরে জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে অবরোধ তুলে নিলেও শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন— অধ্যাদেশ না পাওয়া পর্যন্ত কেউ বাসায় ফিরবেন না। ফলে রাতেও শিক্ষা ভবনের সামনেই অবস্থান নিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন।

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, “দিনভর রাস্তায় থাকলেও কোনো আশ্বাস পাইনি। তাই রাতেও সেখানেই থেকেছি। ঘরে ফিরে গিয়ে আবার অনিশ্চয়তায় পড়তে চাই না। অধ্যাদেশ না পাওয়া পর্যন্ত শিক্ষা ভবনের সামনেই থাকা আমাদের একমাত্র পথ।”

ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী স্মৃতি আক্তার বলেন, “যত কষ্টই হোক, হাতে অধ্যাদেশ না পাওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে থাকব। ১ দফা দাবিতে যে আন্দোলন শুরু করেছি এর সমাধান শুধু অধ্যাদেশ জারি। এর আগে আমরা ফিরছি না। রাতদিন এখানেই থাকব।”

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন দাবি জানানো সত্ত্বেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় কোনো অগ্রগতি দেখাতে না পারায় দেড় লক্ষাধিক শিক্ষার্থী পরিচয় সংকট ও একাডেমিক অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। তাই চূড়ান্ত অধ্যাদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত সড়ক অবরোধ, অবস্থান ও ঘেরাওসহ ধারাবাহিক কর্মসূচি চলবে। পাশাপাশি তারা আন্দোলন আরও জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছেন।

ঘোষণা অনুযায়ী, আজ সোমবার (০৮ ডিসেম্বর) সকাল থেকে নতুন করে আরও শিক্ষার্থী অবস্থান ও অবরোধ কর্মসূচিতে যুক্ত হবেন।

সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর আন্দোলনের প্রতিনিধি নাঈম হাওলাদার জানান, “রবিবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর সাত কলেজের সাতটি স্থান থেকে পৃথক পদযাত্রা শুরু হয়ে শিক্ষা ভবনের সামনে এসে মিলিত হয়। এরপর কলেজ রোড, আব্দুল গণি রোড, দোয়েল চত্বর ও হাইকোর্ট মাজার রোড—এই চারটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করা হয়। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা এই অবরোধ চলায় সচিবালয় এলাকার আশপাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে জনদুর্ভোগ বিবেচনায় শিক্ষার্থীরা চৌরাস্তার অবরোধ তুলে নিলেও অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “শিক্ষার্থীদের একমাত্র দাবি ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির চূড়ান্ত অধ্যাদেশ দ্রুত জারি করা।”

“অধিকার আদায়ের জন্য দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করতে করতে আমরা ক্লান্ত। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। অধ্যাদেশ ছাড়া কেউ বাসায় ফিরবে না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই আন্দোলন করছি। ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় আর থাকতে চাই না। অধ্যাদেশ না আসা পর্যন্ত অবস্থান চলবে,” যোগ করেন নাঈম হাওলাদার।

উল্লেখ্য, গত ১২ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় সাত কলেজকে একীভূত করে ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে নতুন একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার নীতিগত সিদ্ধান্ত জানায়। একই সঙ্গে জানানো হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তিও বাতিল করা হয়েছে।