ব্রেকিং
শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে বন্ধ বার্ষিক পরীক্ষা
আজ সোমবার থেকে ৪ দফা দাবিতে মাধ্যমিক শিক্ষকদের চলছে কর্মবিরতি। ছবি: সংগৃহীত

দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আজ সোমবার (০১ ডিসেম্বর) থেকে চার দফা দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেছেন। এতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আজ বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে না। বেশ কিছু বিদ্যালয় গতকালই নোটিশ দিয়ে পরীক্ষার স্থগিতকরণ জানিয়েছে।

ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল, খুলনার সরকারি করোনেশন গার্লস হাইস্কুল, গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল এবং শেরেবাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ে আজ বার্ষিক পরীক্ষা হয়নি।

বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচির কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক মোহাম্মদ ওমর ফারুক জানিয়েছেন, যদি মন্ত্রণালয় তাদের দাবিগুলো পূরণের বিষয়ে রূপরেখা সহ সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দেয়, তাহলে শিক্ষার্থী ও জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় কর্মবিরতি বাতিল করা হবে।

শিক্ষকরা বলছেন, দাবিসমূহ পূরণ না হলে কর্মবিরতি চলবে। তবে সরকার দাবি মানলে সপ্তাহান্তে বাকি পরীক্ষাগুলো নেওয়া হবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যেই ফল প্রকাশ করা হবে।

শিক্ষকদের চার দফা দাবি হলো-

সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক‍্যাডারভুক্ত করে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গেজেট প্রকাশ; বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখার শূন্য পদগুলোতে দ্রুত নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন কার্যকর করা; সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে বকেয়া টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের মঞ্জুরি প্রদান; ২০১৫ সালের আগে সহকারী শিক্ষকদের দুই থেকে তিনটি ইনক্রিমেন্টসহ বর্ধিত বেতন-সুবিধা বজায় রেখে গেজেট প্রকাশ।

শিক্ষকরা বৃহস্পতিবার থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে দাবিসমূহ না মানায় সোমবার থেকে তারা লাগাতার কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলমান বার্ষিক/নির্বাচনি পরীক্ষা গ্রহণ সংক্রান্ত এবং পরীক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের উপস্থিতি সংক্রান্ত তথ্যাদি দুপুর ১২টার মধ্যে পাঠাতে হবে। বিষয়টি জরুরি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

একদিকে প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে একাংশ ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ এর ব্যানারে সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেড দেওয়াসহ তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন। সংগঠনটি গতকাল সন্ধ্যায় জানিয়েছে, দাবির বাস্তবায়নে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি না হওয়ায় আজ তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) বর্জনের কর্মসূচি চলবে।

তবে ঢাকার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সকাল থেকেই বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। লালবাগ শিক্ষা এলাকার একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে কড়া নির্দেশনা রয়েছে। সাধারণত ঢাকার বিদ্যালয়গুলোয় এ ধরনের কর্মসূচি কম পালিত হয়।

উল্লেখ্য, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মূল বার্ষিক পরীক্ষা আজ ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে।

সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫,৫৬৯টি, যেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক কোটির বেশি এবং শিক্ষক রয়েছেন প্রায় পৌনে চার লাখ। সহকারী শিক্ষকের অনুমোদিত পদ ৩ লাখ ৬৯,২১৬টি, যার মধ্যে ৩ লাখ ৫২,২০৮ জন বর্তমানে কর্মরত। বর্তমানে তারা জাতীয় বেতন স্কেলের ১৩তম গ্রেডে রয়েছেন, শুরুর মূল বেতন ১১ হাজার টাকা। সহকারী শিক্ষকেরা গ্রেড ১০ম করাসহ তিন দফা দাবি পূরণের জন্য এ মাসের শুরুতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান ও বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি শুরু করেছিলেন।