ব্রেকিং
নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ১৫ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা মহিলা পরিষদের

আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধে আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ১৫ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

আজ মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়— সাইবার সহিংসতাসহ নারী ও কন্যার প্রতি সব ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে জনমত গঠনই এবারের প্রতিপাদ্য। তারা বলেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতা কেবল নারীর বিষয় নয়, এটি মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন এবং দেশের সার্বিক উন্নয়নের অন্তরায়।’

তারা আরও জানান, ‘বিবিএস-এর সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশের ৭৬ শতাংশ নারী জীবনে অন্তত একবার কাছের মানুষের (বিশেষ করে স্বামীর) দ্বারা শারীরিক, যৌন, মানসিক বা আর্থিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।’

‘২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১৫ টি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী শুধু ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, ধর্ষণের পর হত্যা ও ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ৭১৩টি। এছাড়া সাইবার সহিংসতা নতুন হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। বিবিএস-ইউএনএফপিএ জরিপে বলা হয়, ৮.৩ শতাংশ নারী–কন্যা জেন্ডারভিত্তিক সাইবার সহিংসতার শিকার।’

তাদের প্রধান কর্মসূচিগুলো হলো—

২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর: সামাজিক মাধ্যমে ই-পোস্টার, লিফলেট ও কনটেন্ট ক্যাম্পেইন করা হবে।

২৭ নভেম্বর: কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তরুণদের সঙ্গে কর্মশালা করা হবে।

৩ ডিসেম্বর: সিরডাপে সাইবার সহিংসতা প্রতিরোধে অংশীজনদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে।

৬ ডিসেম্বর: শহীদ মিনারে বিডি রানার্সের সঙ্গে রোকেয়া দিবসে "রোকেয়া রান" করা হবে।

৮ ডিসেম্বর: শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।

১০ ডিসেম্বর: শহীদ মিনারে মানবাধিকার দিবসে সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হবে।

দেশের সব জেলা শাখায়ও একই সময়ে তৃণমূল পর্যায়ে মতবিনিময় ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘আসুন আমরা সবাই মিলে সাইবার সহিংসতাসহ নারী ও কন্যার প্রতি সব ধরনের নির্যাতনকে ‘না’ বলি। ভুক্তভোগীদের পাশে দাঁড়াই, ঘৃণা-বিদ্বেষের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হই এবং তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে সেতুবন্ধন গড়ে তুলি।’

তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বৈষম্যমূলক আইন সংস্কার, সাইবার সহিংসতা প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন, বিচারহীনতার অবসান এবং জেন্ডার সংবেদনশীল প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারী ও কন্যার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ, নারী অধিকারকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।