ব্রেকিং
রৌমারীতে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে দিশেহারা শত শত পরিবার
নদী ভাঙন। ছবি: সিটিজেন জার্নাল

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলেই নতুন করে ভয়াবহ হয়ে ওঠে নদী ভাঙন। ইতোমধ্যে শত শত পরিবার বসতভিটা, চাষাবাদের জমি, গাছপালা ও মূল্যবান সম্পদ হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দাঁতভাঙ্গা, যাদুরচর, বন্দবেড়, শৌলমারী, চররাজিবপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় রাত-দিন ভাঙন চলছেই। কোথাও কোথাও বাড়ির দেয়াল পর্যন্ত এসে পড়েছে নদীর চৌচালা ধ্বংসযজ্ঞ।

ভিটেমাটি হারানো মানুষের কান্না বসতভিটা হারানো এক কৃষক বলেন, ‘বাপ-দাদার ভিটা নদী খাইয়া নিলো। এখন আর থাকার জায়গা নাই। বাচ্চা নিয়ে কোথায় যামু বুঝতেছি না। সরকার যদি তাড়াতাড়ি বাঁধ না করে, আমরা শেষ হয়ে যামু।’

একই এলাকার একজন গৃহবধূ বলেন, ‘দুই বছরের মধ্যে তিনবার জায়গা বদলাইছি। যা ছিল সব নদী নিয়া গেছে। এখন অন্যের জমিতে থাকতেছি। বাচ্চারা ঠিক মতো স্কুলেও যেতে পারছে না।’

কৃষিজমি হারিয়ে বিপাকে কৃষকেরা প্রতি বন্যায় নদী গিলে খাচ্ছে চাষাবাদের জমিও। স্থানীয় কৃষক অনেকে আক্ষেপ করে বলেন, বছরের পর বছর ধরে ধানের জমি নদীতে চলে যায়। আমরা রোজগার করতে পারি না।

এলাকাবাসীর দাবি- স্থায়ী সমাধান চাই স্থানীয় সমাজকর্মী রুহুল আমিন বলেন, প্রতি বছর শুধু ব্রিফিং আর পরিদর্শন হয়। কিন্তু টেকসই বাঁধ নির্মাণের কাজ হয় না। এটা শুধু রৌমারীর সমস্যা না, জাতীয় সমস্যা। স্থায়ীভাবে ব্রহ্মপুত্র তীর সংরক্ষণ করা না গেলে পুরো উপজেলা ঝুঁকির মুখে পড়বে।

আরেকজন ক্ষতিগ্রস্ত বলেন, আমরা প্রতি বছর ত্রাণ নয়, বালুর বস্তা নয়, স্থায়ী বাঁধ চাই। জীবন বাঁচাতে হলে সরকারকে এখনই বড় উদ্যোগ নিতে হবে।

স্থানীয়দের একটাই দাবি, আমরা আর ভাঙন চাই না। আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ বাঁচাতে স্থায়ী বাঁধ চাই।