ব্রেকিং
জনস্বাস্থ্যে সুরক্ষায় ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ তেল নিশ্চিতের আহ্বান

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেলের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়ে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, খোলা তেল বিক্রি, অস্বচ্ছ প্যাকেজিং এবং ভিটামিন ‘ডি’ সংযোজনের অভাব স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে এবং পুষ্টিহীনতার বড় উৎস হয়ে উঠছে।

আজ মঙ্গলবার ঢাকায় বিএমএ ভবনে ‘সবার জন্য ভিটামিন সমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল: অগ্রগতি, বাধা ও করণীয়’ শীর্ষক সাংবাদিক কর্মশালায় এসব কথা তুলে ধরেন বক্তারা। প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ কর্মশালাটি আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান, সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বাজারে এখনও ড্রামে ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে। জাতীয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট জরিপের তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, দেশে প্রতি পাঁচজন শিশুর একজন ভিটামিন ‘এ’ ঘাটতিতে এবং দুইজন ভিটামিন ‘ডি’ ঘাটতিতে ভুগছে। অথচ আইন থাকা সত্ত্বেও অধিকাংশ ভোজ্যতেলে পর্যাপ্ত ভিটামিন পাওয়া যায় না।

আইসিডিডিআর,বি–এর একটি গবেষণা অনুযায়ী, বাজারে বিক্রি হওয়া ভোজ্যতেলের ৬৫ শতাংশ ড্রামে বিক্রি হয়, যার ৫৯ শতাংশে ভিটামিন ‘এ’ নেই এবং মাত্র ৭ শতাংশে আইনি মান অনুসারে ভিটামিন থাকে।

কর্মশালায় বক্তারা বলেন, অনেক ড্রাম আগে শিল্পপণ্য বা কেমিক্যাল সংরক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হয়, যা খাদ্যোপযোগী নয়। এতে তেলের উৎস ও মান যাচাই করার সুযোগ থাকে না। তাঁরা উল্লেখ করেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২২ সালের জুলাই থেকে খোলা সয়াবিন তেল এবং ডিসেম্বর থেকে খোলা পাম তেল বিক্রি বন্ধ হওয়ার কথা থাকলেও তা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি।

ভিটামিন ‘এ’ ও ‘ডি’ ঘাটতির ক্ষতি তুলে ধরে বক্তারা বলেন, শিশুদের অন্ধত্ব, রিকেটস, মাতৃমৃত্যু, হাড়ক্ষয় ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। তাই ভোজ্যতেলে ভিটামিন সংযোজন জনস্বাস্থ্য রক্ষায় কার্যকর ও সাশ্রয়ী পন্থা। আলো প্রতিরোধী ও অস্বচ্ছ বোতলে তেল সংরক্ষণের ওপরও জোর দেওয়া হয়, কারণ আলোতে ভিটামিন দ্রুত নষ্ট হয়।

কর্মশালার উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের কনসালটেন্ট মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখার, গেইন–এর ড. আশেক মাহফুজ, ইআরএফ সভাপতি দৌলত আক্তার মালা ও প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।