ব্রেকিং
মস্কোর বৈঠক ‘গঠনমূলক’, তবে অগ্রগতি নেই
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে আলোচনায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: আল জাজিরা

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাব্য পথ খুঁজতে মস্কোর বৈঠকে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি। তবে বৈঠক ‘গঠনমূলক’ হয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে পাঁচ ঘণ্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন। তবে রাশিয়ার দখল করা ইউক্রেনের ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে, গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়ে কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি কোনো পক্ষ।

বৈঠকের আগেই পুতিন জানিয়ে দেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ শেষ করার জন্য ইউরোপ যেসব দাবি তুলছে তা মস্কোর কাছে ‘গ্রহণযোগ্য নয়’। ইউরোপের দেশগুলো যুদ্ধ শুরু চাইলে রাশিয়াও প্রস্তুত! তবে তিনি এ-ও জানান, রাশিয়ার কোনও ইচ্ছা নেই ইউরোপীয় দেশগুলোতে হামলা চালানোর।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে রাশিয়ার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্টের অর্থনৈতিক দূত কিরিলি দিমিত্রিয়েভ এবং জ্যেষ্ঠ সহযোগী ও পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ।

দীর্ঘ বৈঠক শেষে মধ্যরাতে সাংবাদিকদের ইউরি উশাকভ বলেন, ইউক্রেনের ভূখণ্ড ছাড় দেওয়ার বিষয়ে আমরা এখন পর্যন্ত সমঝোতার কোনো পথ খুঁজে পাইনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া কিছু প্রস্তাব নিয়ে আরও আলোচনা হতে পারে।

বৈঠকটি খুবই ‘কার্যকর ও গঠনমূলক’ হয়েছে জানিয়ে উশাকভ বলেন, ওয়াশিংটন ও মস্কো— উভয় দিক থেকেই অনেক কাজ এখনো বাকি আছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া ২৮ দফা শান্তি প্রস্তাবের খসড়া নিয়ে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার মস্কো যান উইটকফ ও ট্রাম্প-জামাতা কুশনার। বৈঠক শেষে মস্কো ত্যাগের আগে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।

এর আগে গত রবিবার ওয়াশিংটনের শান্তি প্রস্তাব সংশোধনে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী উইটকফের বানানো ফ্লোরিডার বিলাসবহুল গলফ রিসোর্ট শেল বে ক্লাবে ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠক হয়। পরদিন সোমবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ প্যারিসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। পরে তারা যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, পোল্যান্ড ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ শীর্ষ ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ফোনালাপে যুক্ত হন। এসময় ইউরোপীয় নেতারা জেলেনস্কির প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের মনে করেন, ইউক্রেনকে সামনে রেখে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে ইউরোপের দেশগুলো। যদি হঠাৎ তারা হামলা করে তাতেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। মঙ্গলবার মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের আগে পুতিন বলেন, শান্তিপ্রতিষ্ঠা করা ইউরোপের দেশগুলোর লক্ষ্য নয়। তারা যুদ্ধের পক্ষে। তাদের প্রস্তাবিত আলোচনার খসড়া রাশিয়ার কাছে একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ইউরোপ যদি হঠাৎ করে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করতে চায়, এর জন্য আমরা এখনই প্রস্তুত রয়েছি।

সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স