ব্রেকিং
মৃত নবজাতক নিয়ে থানায় বাবা
মৃত নবজাতককে নিয়ে থানায় উপস্থিত হয়ে বিচার চেয়েছেন বাবা। ছবি : সিটিজেন জার্নাল

গাজীপুরের শ্রীপুরে চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে নার্স দিয়ে প্রসব করানোর সময় নবজাতক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মৃত নবজাতককে নিয়ে থানায় উপস্থিত হয়ে বিচার চেয়েছেন বাবাসহ স্বজনেরা।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা চৌরাস্তায় আল রাজি হাসপাতালে নবজাতক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। নবজাতকের বাবা নাজমুল ইসলাম। তার বাড়ি উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের আজুগিরচালা গ্রামে।

নাজমুল বলেন, শনিবার সকালে সাড়ে ৮টার দিকে আমার স্ত্রী শারমিন আক্তারকে আল রাজি হাসপাতালে ভর্তি করি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ১৩ হাজার টাকায় সিজারিয়ান অপারেশন করার চুক্তি হয়। তবে অপারেশন না করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নরমাল ডেলিভারি করানোর চেষ্টা করে সময় পার করতে থাকে। হাসপাতালে চিকিৎসক না থাকায় নার্স কল্পনা আক্তার নিজে প্রসব করানোর সময় নবজাতকের মৃত্যু হয়।

নবজাতকের মা শারমিন আক্তার বলেন, আমার ব্যথা উঠলে ওই হাসপাতালের নার্স কয়েকটি ইনজেকশন দেয়। এরপর নার্সরা আমাকে অনেক কষ্ট দেয়। এক পর্যায়ে জরায়ুর মুখ কেটে মৃত নবজাতক বের করে।

নার্স কল্পনা আক্তার বলেন, আমি কয়েক বছর অপারেশন থিয়েটারে কাজ করেছি। ফলে আমার অভিজ্ঞতা হয়েছে। রোগীর অবস্থা খারাপ থাকায় আমি নবজাতক ডেলিভারি করাই। ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর নবজাতক কান্না না করায় অন্য একটি হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর নবজাতক মারা গেছে।

আল রাজি হাসপাতালের ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) রাসেল মিয়া বলেন, এখানে কোনো চিকিৎসক ছিল না। তাই রোগী ভর্তি করতে নিষেধ করেছিলাম নার্স কল্পনাকে। আমাকে না জানিয়ে কখন হাসপাতালে রোগী ভর্তি করা হয়েছে, আমি জানি না।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গেই সিভিল সার্জন স্যারকে জানিয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

হাসপাতালটির লাইসেন্স আছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আগে তারা সময় নিয়েছে। এখন কাগজপত্র কী আছে তা দেখানোর জন্য কয়েকদিন আগে চিঠি দিয়েছি।

শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল ইসলাম বলেন, মৃত নবজাতককে নিয়ে তার বাবা-মা ও স্বজনেরা থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এরইমধ্যে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তীতে স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইদুল ইসলাম বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়েই ঘটনা তদন্তে যাবে উপজেলা প্রশাসন। লাইসেন্সসহ আনুষাঙ্গিক বিষয়গুলো দেখে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।

গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মামুনুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সরেজমিনে গিয়ে তদন্তের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দুই স্তরের তদন্তের রিপোর্ট দেখে এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।